বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১
মো.নাঈম মিয়াজী, মতলব উত্তর (চাঁদপুর)।।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাত শেষে ভোরে আলোর ফুটলেও কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে থাকে চারপাশ। একটু বাতাস বইলেই কেপে উঠছে শরীর। আর তাতে বুঝা যায় দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কারিগররা।
প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক মাসে শীতের জন্ম হলেও পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস শীত মৌসুম হিসাবে বিবেচিত হয়। মতলব উত্তরের বাসিন্দারা শীত মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসাবে হিড়িক পরে গেছে লেপ-তোষক বানানোর দোকানে। অনেক পরিবারের লোকজন তাদের বাস্কে ভর্তি রাখা লেপ-তোষক বের করে মেরামত করছে।
কারিগররা বলছেন, কিছুদিন পরে ক্রেতাদের ভিড় আরো বাড়বে। ক্রেতাদের এই আনাগোনা চলবে পুরো শীত জুড়ে। এদিকে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে শীতের পুরাতন কাপড় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যাদের লেপ-তোষক কেনা বা বানানোর টাকা নেই তারা ভিড় জমাচ্ছে ওইসব দোকানে। সেখানে দেড়শ থেকে দুইশ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ভালো মানের পুরানো কাপড়। কেউ আবার অল্প টাকায় পাতলা কম্বলও ক্রয় করছেন।
সরেজমিনে ছেংগারচর, নতুন বাজার, সুজাতপুর, কালীপুর, কালীর বাজার, আমিরাবাদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, লেপ-তোষকের দোকানের সবকটিতেই ছিল কারিগরদের লেপ বানানোর ব্যস্ততা। দোকানিরাও অর্ডার গ্রহণ এবং ক্রেতাদের বিভিন্ন রঙ-মানের কাপড় ও তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। একই দৃশ্য চোখে পড়ে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে।
ছেংগারচর বাজারের লেপ-তোষক ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন জানান, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোষক তৈরির খরচ। এ বছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ দুইশ থেকে তিনশ টাকা বেড়ে গেছে। আর একটি লেপ/তোষক বিক্রি করে তাদের তিনশ থেকে পাঁচশ টাকা লাভ হয়।
এদিকে, শীতের আগমনী বার্তার সাথে পাল্লা দিয়ে শীত নিবারণের উপকরণ লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। কারণ প্রতিটি এলাকাতেই শীত জেকে বসার আগেই শীত নিবারণে ওই সব লেপ-তোষক তৈরীর দোকানে ভিড় করছে এ অঞ্চলের মানুষ। শীতের কারণে অনেকে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু করেছেন।
ব্যবসায়ীরা জানায়, শীতের আগমনীর সাথে চাঁদপুরের বিভিন্ন লেপ-তোশক কারিগর ও ব্যবসায়ীদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। পৌর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার ছোট-বড় হাটবাজারগুলোয় জাজিম, বালিশ, লেপ, তোশক তৈরি ও বিক্রির কাজে শতাধিক কারিগর ও ব্যবসায়ী নিয়োজিত। আবার কাপড়ের মান বুঝে লেপ-তোষকের দাম নির্ধারণ করা হয়। ৪-৫ হাত লেপের দাম পড়ছে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। আর তোশক তৈরিতে দাম পড়ছে ১ হাজার থেকে ১৪০০ টাকার মধ্যে।
তবে কেউ কেউ বলছেন, এবার তুলার দাম বেশি। কালার তুলা প্রতিকেজি ৩৫টাকা, মিশালী তুলা ২০ টাকা, সিম্পল তুলা ৮০ টাকা, শিমুল তুলা ৪৫০ টাকা ও সাদা তুলা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি আরও বাড়বে এমনটিই প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
ছেংগারচর পৌর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, সময় মতো লেপ-তোষক ডেলিভারি দেয়ার জন্য তারা ব্যস্ত। সারা বছরের মধ্যে এ শীত মৌসুমেই তারা কাজের বেশি অর্ডার পান। ফলে এ সময় তাদের কাজ বেশি করতে হয়। এক মৌসুমের আয় দিয়েই তাদের পুরো বছর চলতে হয়।